রিকার্ডো কাকা-Ricardo Kaká lifestyle/biogrphy
রিকার্ডো কাকা-Ricardo Kaká biogrphy
নামঃকাকা
পূর্ণ নামঃরিকার্দো আইজেকসন দস সাঁন্তুস লেইতি
জন্মঃ২২ এপ্রিল ১৯৮২ (বয়স ৩৮)
জন্ম স্থানঃগামা, ফেডারেল ডিসট্রিক্ট, ব্রাজিল
উচ্চতাঃ১.৮৬ মি (৬ ফু ১ ইঞ্চি)
জন্মস্থানঃব্রাসলিয়া, ব্রাজিল
প্রারম্বিক জীবন
২২ এপ্রিল ১৯৮২ কাকা ব্রাজিলের গামার একটি ধনী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।তার বাবা একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ও মা শিক্ষিকা ছিলেন।তার ভাই ও একজন ফুটবল খেলোয়াড়।তার ভাই রিকার্ডো উচ্চারণ করতে পারতো।তাকে শুধু কাকা বলে সম্বোধন করতো।সেখান থেকেই মূলত তার নাম হয়ে যায় কাকা।৭ বছর বয়সে সে সাও পাওলো তে বসবাস শুরু করে।সেখানকার স্কুল থেকে একটি যুব ক্লাবে ভর্তি হয় এবং একটি টুর্নামেন্ট জিতে। তখন সাও পাওলো ফুটবল ক্লাব তাদের যুব দলে তাকে খেলার সুযোগ করে দেয়।তবে ১৮ বয়সে সাতার কাটার সময় তার মেরুদন্ডে ব্যাথা পান।তখন প্যারালাইসিসের আশঙ্কাও দেখা যায়।তবে অতি তাড়াতাড়ি সেটা থেকে তিনি সেরে উঠেন।
ব্যক্তিগত জীবন
Ricardo Kaká |
কাকা ২০০৫ সালের ২৩ ডিসেম্বর সাও পাওলোর একটি খ্রিস্টান চার্চে তার শৈশবের পছন্দ ক্যরোলাইনকে বিয়ে করেন।এই দম্পতির ২ জন সন্তান:ছেলে লুকা (জন্ম ১০ জুন ২০০৮) ও মেয়ে ইসাবেলা (জন্ম ২৩ এপ্রিল ২০১১) আছে।তবে ২০১৫ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা নিজেদের বিবাহ বিচ্ছেদ এর সংবাদ প্রকাশ করেন।কাকা বর্তমানে ব্রাজিলিয়ান মডেল ক্যারোলিনা দিয়াস এর সঙ্গে প্রণয়ে আবদ্ধ আছেন ।
ক্যারিয়ার স্পেশাল
কাকা তার খেলোয়াড়ি জীবন শুরু করেন ব্রাজিলিয়ান ক্লাব সাউ পাওলো তে। প্রথম ম্যাচেই বদলি হিসেবে নেমে ১-০ তে পিছিয়ে থাকা দলকে জিতান পরপর দুই গোল করে । শুঁয়োপোকা থেকে প্রজাপতি হওয়ার গল্প টার শুরু এখানেই। প্রথম সিজনেই সবার নজর কাড়েন নিজের পারফর্মেন্সের মাধ্যমে । ২০০২ সালে জিতে নেন “Bola de oura” অর্থাৎ গোল্ডেন বল যা ব্রাজিলের ফুটবলার অফ দ্যা ইয়ারের সমতুল্য। একই বছর তিনি নিজের পজিসনের সেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হন । একজন উঠতি তরুণের এমন অতিমানবীয় পার্ফমেন্স চোখ এড়ায়নি তৎকালীন ব্রাজিলের কোচ স্কলারীর । জায়গা করে নেন ব্রাজিলের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ।সাউ পাওলো এবং ব্রাজিলের হয়ে তার মন্ত্রমুগ্ধকর খেলা নজর কাড়ে রিয়াল মাদ্রিদ, এসি মিলানের মতো বড় ক্লাবগুলোর।
ক্লাব ও আন্তর্জাতিক কারিয়ার
Ricardo Kaká |
২১ বছর বয়সেই ২০০৩ এর গ্রীষ্মে যোগ দেন এসি মিলানে । সেসময় মিলানের মিডফিল্ড ছিলো রুই কস্তা, রিভালদো, পিরলো, সিডর্ফের মতো বিশ্বসেরা প্লেয়ার দের নিয়ে গড়া । তাই দলে জায়গা পাওয়াটাই ছিলো সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ । তবে কোচ কার্লো আনচেলত্তি ছিলেন পাকা জহুরী । রত্ন চিনতে ভুল করেন নি তিনি । প্রথম দিন ট্রেনিং গ্রাউন্ডে কাকার প্র্যাক্টিস দেখেই তিনি বুঝে যান দুই পা দিয়ে কি করার ক্ষমতা রাখেন এই ফুটবলার । অভিজ্ঞ রুই কস্তাকে বসিয়ে প্রথম একাদশে জায়গা করে দেন কাকাকে । কোচের আস্থার মূল্য দিতে দেরী করেননি তিনি । প্রথম ম্যাচেই শেভচেংকোকে দিয়ে করান ম্যাচজয়ী গোল । দ্বিতীয় ম্যাচে নিজেই করে ফেলেন ৩০ গজ দূর থেকে চোখ ধাঁধানো একটি গোল । এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নি । অল্প দিনেই হয়ে গিয়েছিলেন দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ । প্রতি ম্যাচেই দিয়ে গেছেন নিজের যোগ্যতার প্রমাণ । প্রথম সিজনেই ইউরোপে করেন ১৪ টি গোল । দীর্ঘ ৪ বছর পর দলকে জেতান লিগ শিরোপা । প্রথম সিজনেই জিতে নেন “সিরিআ প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার” । একই সাথে “সিরিআ ফরেইন প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার” ও জিতে নেন এই তরুণ ফুটবলার ।শুধু লিগ সেরা হয়েই ক্ষান্ত হননি তিনি । পরের সিজনে (২০০৪-০৫) লিগের পাশাপাশি চ্যাম্পিয়নস লিগেও নিজের প্রতিভার ছাপ রাখেন কাকা । গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ গুলোতে ম্যাচের মোড় ঘুড়িয়ে দলকে তুলেছিলেন ফাইনালে । ফাইনালে সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছিলেন দুইটি গোল । যদিও স্রষ্টা সেদিন ইস্তাম্বুলের গল্প টা লিখেছিলেন অন্যভাবে । নয়তো লিভারপুলের সেই অসাধারণ কামব্যাক কে মিলানের দুর্ভাগ্য মেনে নিয়ে নিজেদের সান্ত্বনা দেয়া ছাড়া আর কিইবা করার ছিলো । চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে না পারলেও, টুর্নামেন্টের সেরা মিডফিল্ডার নির্বাচিত হন তিনি । সে বছর ব্রাজিলের হয়ে জিতেন কনফেডারেশনস কাপ ।
ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে গোল দিয়ে দলের জয়ে ভূমিকা রাখেন ।
মাঝমাঠ থেকে ড্রিবলিং করে নিয়ে যাওয়া সেই দুর্দান্ত গোলটি টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেরা গোল হিসেবে নির্বাচিত হয় ।জীবনের সেরা সময় টা এসেছে ২০০৭ সালে।বহু বছর পর এসি মিলান কে জিতান বহু আকাঙ্ক্ষিত চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা ।গ্রুপ পর্বে একটি হ্যাট্রিক, কোয়ার্টার ফাইনালে একমাত্র গোল, সেমিফাইনালে শক্তিশালী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে দুই লিগ মিলিয়ে ৩ গোল এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু এসিস্টের মাধ্যমে প্রায় একাই দলকে ফাইনালে টেনে নিয়ে যান ।ফাইনালে ইনজাগী কে দিয়ে করিয়েছিলেন আরেকটি গোল । টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরষ্কার থেকে শুরু করে প্রায় সব ধরণের ব্যক্তিগত পুরষ্কারই জিতে নেন সে বছর । মেসি রোনালদো কে পিছনে ফেলে জিতে নেন মহা আরাধ্য ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের খেতাব।দ্বিতীয় হওয়া রোনালদোর চেয়ে পেয়েছিলেন ২০০ পয়েন্ট বেশী । আরো জিতেন “উয়েফা প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার” এবং “ব্যালন ডি অর”।
জায়গা করে নেন ফিফ প্রো একাদশে ।এরপর উয়েফা সুপার এবং ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালেও গোল করে প্রমাণ করেছিলেন নিজেকে বিগ ম্যাচ প্লেয়ার হিসেবে ।জিতেছিলেন ক্লাব বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের খেতাবও ।২০০৯ এ আবারো ব্রাজিলের হয়ে জিতেন কনফেডারেশন কাপ । ট্যুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হয়ে জিতে নেন “গোল্ডেন বল এওয়ার্ড”।২০১০ বিশ্বকাপে হয়েছিলেন যৌথভাবে ট্যুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ এসিস্ট মেকার ।
যদিও ব্রাজিল নেদারল্যান্ডস এর কাছে ২-১ হেরে ট্যুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেন ।২০০৯ এ এসি মিলান থেকে যোগ দেন রিয়াল মাদ্রিদে । মাদ্রিদে যোগ দেয়ার পর ইঞ্জুরি যেনো ঘাড়ে চেপে বসে এই সাবেক বিশ্বসেরার । তাই নতুন ক্লাবে পার্ফমেন্সটা ঠিক কাকাসুলভ হয়নি । ইঞ্জুরিটা না থাকলে হয়তো ইতিহাস আজ অন্যভাবে লেখা হতো । মাদ্রিদে তাই সময়টা ভালো যায়নি তার । বেশীরভাগ সময় সাইড বেঞ্চে বসেই কাটাতে হয়। ২০১৩ তে আবারো পুরনো ক্লাব মিলানে ফিরে যান কাকা ।
ক্যারিয়ারের মোটামুটি ইতি এখানেই টানা যায় । কেননা মুখ ধুবড়ে পড়া সেই মিলান কিংবা পরে জয়েন করা অর্লান্ডো সিটি তে কাটানো সময় টা অনেকটা ঝরে পড়া ফুলের মতোই । তবে এর আগেই নিজের নাম ইতিহাসের পাতায় খোদাই করে ফেলেছিলেন তিনি । তাই শেষ টা ভালো না হলেও জীবন্ত কিংবদন্তীর স্বীকৃতি পেতে খুব একটা বেগ পোহাতে হয় নি তাকে ।
দলীয় এবং ব্যক্তিগত অর্জনগুলোঃ
ক্লাবঃ
- সেরি আ (২০০৩-০৪)
- সুপার কোপা ইটালিয়ানা (২০০৪)
- উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ (২০০৬-০৭)
- উয়েফা সুপার কাপ (২০০৭)
- ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ (২০০৭)
- কোপা দেল রে (২০১০-১১)
- লা লিগা (২০১১-১২)
জাতীয় দলের হয়ে
Ricardo Kaká |
- ফিফা বিশ্বকাপ (২০০২)
- কনফেডারেশনস কাপ (২০০৫,২০০৯)
ব্যক্তিগত
- বোলা ডি অউরো (২০০২)
- বোলা ডি প্রাটা (২০০২)
- সাউথ আমেরিকান টিম অফ দ্যা ইয়ার (২০০২)
- CONCACAF গোল্ড টিম বেস্ট ইলেভেন (২০০৩)
- সিরিআ ফরেইন প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার (২০০৪,২০০৬,২০০৭)
- সিরিআ প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার (২০০৪, ২০০৭)
- উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ টপ এসিস্ট প্রোভাইডার (২০০৪-০৫, ২০১১-১২)
- উয়েফা ক্লাব মিডফিল্ডার অফ দ্যা ইয়ার (২০০৪-০৫)
- উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ব্রোঞ্জ ফুট (২০০৫-০৬)
- উয়েফা টিম অফ দ্যা ইয়ার (২০০৬, ২০০৭, ২০০৯)
- ফিফ প্রো ওয়ার্ল্ড ইলেভেন (২০০৬,২০০৭,২০০৮)
- Pallone d’Argento (২০০৬-০৭)
- উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ টপ স্কোরার (২০০৬-০৭)
- উয়েফা ক্লাব ফরওয়ার্ড অফ দ্যা ইয়ার (২০০৬-০৭)
- উয়েফা ক্লাব ফুটবলার অফ দ্যা ইয়ার (২০০৬-০৭)
- ব্যালন ডি অর (২০০৭)
- ফিফা ওয়ার্ল্ড প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার (২০০৭)
- ফিফা প্রো ওয়ার্ল্ড প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার (২০০৭)
- ওয়ার্ল্ড সকার প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার (২০০৭)
- IFFHS ওয়ার্ল্ড বেস্ট মিডফিল্ডার অফ দ্যা ইয়ার (২০০৭)
- IAAF ল্যাটিন স্পোর্টসম্যান অফ দ্যা ইয়ার (২০০৭)
- Onze d’Or (২০০৭)
- ফিফা ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ গোল্ডেন বল (২০০৭)
- ফিফা ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ মোস্ট এসিস্ট(২০০৭)
- টাইমস ১০০ (২০০৮, ২০০৯)
- মারাকানা হল অফ ফেম (২০০৮)
- Samba d’Or (২০০৮)
- মার্কা লিজেন্ড এওয়ার্ড (২০০৯)
- ফিফা কনফেডারেশনস কাপ গোল্ডেন বল (২০০৯)
- ফিফা কনফেডারেশনস কাপ বেস্ট ইলেভেন (২০০৯)
- ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ টপ এসিস্ট প্রোভাইডার (২০১০)
- এসি মিলান হল অফ ফেম (২০১০)
- এমএলএস অল স্টার (২০১৫,২০১৬,২০১৭)
- উয়েফা আল্টিমেট টিম অফ দ্যা ইয়ার(২০১৫)
Share with your friends if you love our-Expose Lifestyle
For more Visit -Expose Lifestyle
Hope you liked this Ricardo Kaká biography, and if you have any queries or suggestions regarding the same, feel free to comment below.
No comments