আলিয়া ভাটের জীবনী-Alia Bhatt biography/lifestory
আলিয়া ভাটের জীবনী-Alia Bhatt biography/lifestory
নামঃআলিয়া ভাট
অন্যান্য নামঃআলু
জন্মঃ১৫ মার্চ ১৯৯৩ (বয়স ২৭)
জন্মস্থানঃবম্বে (বর্তমানে মুম্বাই), মহারাষ্ট্র, ভারত
জাতীয়তাঃব্রিটিশ ভারতীয়
নাগরিকত্বঃব্রিটিশ
শিক্ষাঃআইবিডিপি
শিক্ষার্থীঃজামাবাই নার্সি বিদ্যালয়
পেশঃঅভিনেত্রী,মডেল,গায়িকা
কার্যকালঃ১৯৯৬, ২০১২-বর্তমান
আদি নিবাসঃমুম্বাই
পিতাঃমহেশ ভাট
মাতাঃসোনি রাজদান
জন্ম ও শৈশব
আলিয়া ভাট ১৯৯৩ সালের ১৫ মার্চ ভারতের বম্বেতে (বর্তমানে মুম্বই) জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক মহেশ ভাট এবং মা অভিনেত্রী সোনি রাজদান।আলিয়ার বাবা-মা দুজনই হিন্দুধর্মালম্বী ছিলেন, তবে তাদের বিবাহের সময় দুজনই ইসলাম ধর্মে দীক্ষা নেন। বাবা-মা অনুসারে, ভাট এবং তার বোন শাহীন নাস্তিক হিসাবে বেড়ে উঠেন।মায়ের দিক থেকে, ভাট কাশ্মীরী-জার্মান এবং বাবার দিক থেকে,তিনি মূলত গুজরাতি বংশদ্ভূত।তার ডাকনাম আলু।ভারতীয় পরিচালক নানাভাই ভাট তার পিতামহ। তার বড় বোন, শাহীন (জন্ম ১৯৮৮) একজন লেখক;এবং চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও নির্মাতা পূজা ভাট তার সৎবোন ও সৎভাই চলচ্চিত্র অভিনেতা রাহুল ভাট। অভিনেতা ইমরান হাশমী ও চলচ্চিত্র পরিচালক মোহিত সুরি তার চাচাতো ভাই এবং প্রযোজক মুকেশ ভাট তার চাচা।ভাট ২০১১ সালে মুম্বইয়ের জামাবাই নার্সি বিদ্যালয় (আইবিডিপি) থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন।
জন্মসূত্রে ভাট ব্রিটিশ নাগরিক।রাহুল ভাট্ট (সৎ ভাই, ফিটনেস প্রশিক্ষক) ও পূজা ভাট্ট সৎ বোন।
সম্পর্ক
রূপালী পর্দায়
আলিয়া ভাটের রূপালী পর্দায় অভিনয়ের সূচনা ঘটে ছয় বছর বয়সে, ১৯৯৯ সালে শিশুশিল্পীর ভূমিকায়, তনুজা চন্দ্র পরিচালিত নাট্যধর্মী সংঘর্ষ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে। এই চলচ্চিত্রে ভাটের সহ-শিল্পী ছিলেন, অক্ষয় কুমার ও প্রীতি জিন্টা, যেখানে ভাট জিন্টার শৈশব চরিত্রে অভিনয় করেছেন।চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে প্রায় ₹৫০ মিলিয়ন (US$৬,৯৫,৭৩০) আয় করে। ২০১২ সালে, ভাট চলচ্চিত্রে সর্বপ্রথম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন সিদ্ধার্থ মালহোত্রা ও বরুণ ধবনের বিপরীতে, করণ জোহর পরিচালিত স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার চলচ্চিত্রে।এ চলচ্চিত্রে তিনি শানায়া সিংহানিয়া চরিত্রে উপস্থিত হয়েছেন। চলচ্চিত্রে শানায়া একজন অত্যাধুনিক কিশোরী, যিনি ধবনের চরিত্রের সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত হন আবার অন্য চরিত্র মালহোত্রার প্রতিও এক পর্যায়ে আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। বলিউড হাঙ্গামার তরণ আদর্শ, ভাটের অভিনয় কর্মক্ষমতা সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন, "আলিয়ার চরিত্র কাভি খুশি কাভি গাম... (২০০১) চলচ্চিত্রে কারিনা কাপুরের অভিনয় স্মরণ করিয়ে দেয়। আড়ম্বরপূর্ণ, অভিজাত, রূপালী চামচ মুখে জন্মগ্রহণকারী, যে কিনা শুধু তার পোশাক-ব্যাগ জাঁমকালো ভাবে প্রদর্শন করতে পছন্দ করে আর ভালোবাসে ঐশ্বর্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে।অত্যন্ত বিচ্ছুরিতভাবে, আলিয়া একটি অতি-আত্মবিশ্বাসী চরিত্রে আত্মপ্রকাশ করেছেন।"হিন্দুস্তান টাইমসের চলচ্চিত্র সমালোচক অনুপমা চোপড়া কাপুর অভিনীত চরিত্রের সঙ্গে ভাট অভিনীত চরিত্রের সাদৃশ্য উল্লেখ করেছেন শুধুমাত্র তার "অভিঘাতী মনোভাব ব্যাতীত"।
স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার ছিল একটি বাণিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্র যা ২০১২ সালে বক্স অফিসে প্রায় ₹ মিলিয়ন (US$৯.৭৪ মিলিয়ন) আয় করে।২০১৪ সালে ভাটের তিনটি চলচ্চিত্র মুক্তির মাধ্যমে তিনি বলিউডে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে শুরু করেন।একই বছর তিনি রণদীপ হুদার বিপরীতে অভিনয় করেছেন ইমতিয়াজ আলী পরিচালিত হাইওয়ে পথচলচ্চিত্রে।এই চলচ্চিত্রে অপহরণ হওয়ার পর স্টকহোম সিনড্রোমে আক্রান্ত একটি কিশোরীর চরিত্রে ভাটের অভিনয় চলচ্চিত্র সমালোচকদের ইতিবাচক মন্তব্য অর্জন করে।ফিল্মফেয়ারের রাচিত গুপ্ত উল্লেখ করেছেন, "এটা বিস্ময়কর যে মাত্র বিশ বছর বয়সে কীভাবে আলিয়া এতো নিপুণ তারতম্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। এমন, যেন ওই চরিত্রের সঙ্গেই সে বেড়ে উঠেছে। সত্যিই তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রের সর্বাধিক প্রতিশ্রুতিশীল নতুন অভিনেত্রী।" সাইফির'র সোনিয়া চোপড়া মন্তব্য করেন, ভাট তার চরিত্রে "সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জিত", এবং এও উল্লেখ করেন যে, "আলিয়া তার কুণ্ঠাহীন ও বাস্তব কর্মক্ষমতা দিয়ে আপনাকে আবেগাপ্লুত করে তুলতে সক্ষম।
"চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে সাফল্য অর্জন করতে ব্যর্থ হলেও,ভাট শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার সমালোচক পুরস্কার লাভ করেন এবং একই অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে মনোনীত হয়েছিলেন।২০১৪ সালে, অর্জুন কাপুরের বিপরীতে করণ জোহর ও সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার যৌথ প্রযোজনায় অভিষেক বর্মণ পরিচালিত ২ স্টেটস চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন ভাট। ২০১৪ সালের এপ্রিলে মুক্তিপ্রাপ্ত এই চলচ্চিত্র চেতন ভগতের একই নামের উপন্যাসের চলচ্চিত্ররূপ। যেখানে আইআইএম আহমেদাবাদের দুই শিক্ষার্থীর গল্প বর্ণনা করা হয়েছে যারা তাদের বাবা-মাকে নিজেদের সম্পর্কের অনুমোদনের জন্য রাজি করানোর সমস্যায় পড়ে।
এখানে অনন্য স্বামীনাথম নামে একটি তামিল মেয়ের চরিত্রে অভিনয়ের জন্যে ভাট তামিল ভাষা রপ্ত করেছিলেন।সমালোচকরা আলিয়ার অভিনয়ের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে রেডিফ.কমে বলেছিলেন, ভাট "সত্যিই তার চরিত্রের মধ্যে বেড়ে উঠেছেন।"ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের শুভ্রা গুপ্ত বলেন, ভাট ছিলেন "বিস্ময়কর" এবং ছিলেন "সরল ও প্রাণবন্ত এবং স্বাভাবিক"। চলচ্চিত্রটি সে সময়ে শীর্ষ আয়কারী প্রযোজনা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে, যা বিশ্বব্যাপী ₹১.৭ বিলিয়ন (US$২৩.৬৫ মিলিয়ন) আয় করেছিল।২০১৪ সালে ভাটের সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ছিল শশাঙ্ক খৈতান পরিচালিত প্রণয়ধর্মী হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্রহাম্পটি শর্মা কি দুলহনিয়া।
যেখানে তিনি কাব্য প্রতাপ সিং নামে এক পাঞ্জাবী মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যে তার বিয়ের কিছুদিন পূর্বে একজন অপরিচিতের সঙ্গে প্রণয় সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে পড়েন। চলচ্চিত্রটি দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে (১৯৯৫) চলচ্চিত্রের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদিত এবং করণ জোহর প্রযোজিত এই চলচ্চিত্রে ভাটের সহ-শিল্পী ছিলেন বরুণ ধবন এবং সিদ্ধার্থ শুক্লা।হাম্পটি শর্মা কি দুলহনিয়া ভাটের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র যা বিশ্বব্যাপী ₹১ বিলিয়ন (US$১৩.৯১ মিলিয়ন) এর অধিক আয় করছিল।এই চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার সমালোচক পুরস্কার লাভ করেন, এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে মনোনীত হন।ভাটের এসকল সাফল্যে ২০১৪ সালে বক্স অফিস ইন্ডিয়া তাকে বছরের শীর্ষ বলিউড অভিনেত্রী হিসাবে আখ্যা দেয়।
সাফল্য(২০১৬–বর্তমানা)
২০১৬ সালে ভাটের তিনটি মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রের প্রথমটিতে, ভাট একজন প্রাণবন্ত যুবতীর চরিত্রে সিদ্ধার্থ মালহোত্রা ফাওয়াদ খানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন শকুন বাত্রা পরিচালিত কাপুর অ্যান্ড সন্স চলচ্চিত্রে, যা একটি অচল পরিবার সম্পর্কিত নাট্য-চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি সমালোচকদের ইতিবাচক মন্তব্যের পাশাপাশি বাণিজ্যিক সাফল্য অর্জন করেছিল। একই বছর ভাট ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের একটি দারিদ্র্যপীড়িত বিহারি অভিবাসী চরিত্রে অভিনয় করেন উড়তা পাঞ্জাব চলচ্চিত্রে। এটি অভিষেক চৌবে পরিচালিত মাদকের অপব্যবহার সম্পর্কিত একটি অপরাধ নাট্য চলচ্চিত্র।
এই চরিত্রের কিছু উল্লেখযোগ্য অংশগুলি ভাট পূর্বে তার বিভিন্ন চলচ্চিত্রে সম্পাদন করেছিলেন এবং প্রস্তুতিস্বরুপ তিনি মাদকবিষয়ক বিভিন্ন প্রামাণ্যচিত্র দেখা এবং বিহারি উপভাষায় কথা বলতে শিখেছিলেন।এই চলচ্চিত্রের সহ-অভিনেতা শাহিদ কপুর, কারিনা কাপুর এবং দিলজিৎ দোসাঞ্জ, বিতর্কের সৃষ্টি করেছিলেন যখন কেন্দ্রীয় চলচ্চিত্র অনুমোদন পর্ষদ উল্লেখ করে যে চলচ্চিত্রটি নেতিবাচকভাবে পাঞ্জাবের প্রতিনিধিত্ব করেছে এবং প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির বিপক্ষে চলচ্চিত্রটির ব্যাপক সেন্সরশিপ দাবি করে। বম্বে উচ্চ আদালত পরবর্তীতে একটি দৃশ্য বাদ দিয়ে প্রদর্শনীর জন্য চলচ্চিত্রটির ছাড়পত্র দেয়া হয়।চলচ্চিত্রে ভাটের অভিনয়-দক্ষতা সমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছিল, বিভিন্ন মন্তব্যকারীদের বিশ্বাস যে এটি তার সেরা কর্মক্ষমতা ছিল।রেডিফ.কম-এর রাজা সেন লিখেছিলেন, ভাট "তার উচ্চারণভঙ্গি নিয়ে বদ্ধ পরিকর এবং চলচ্চিত্রের সবচেয়ে অপ্রীতিকর অধ্যায়ের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম"।সমালোচকদের প্রশংসা প্রাপ্তির অব্যহতির মধ্য দিয়ে ভাট একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী চিত্রগ্রাহকের ভূমিকায় উপস্থিত হয়েছিলেন গৌরী সিন্ধে পরিচালিত ডিয়ার জিন্দেগি (২০১৬) নাট্য-চলচ্চিত্রে, যেখানে তিনি শাহরুখ খানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন।
ইন্ডিওয়ারের একটি লেখায়, অ্যানিসা জাভেরি উল্লেখ করেছেন যে, ভাট তার চরিত্রকে এমন অবস্থায় উন্নিত করেছ যেখানে "একটি ত্রি-মাত্রিক রূপ দেয়া হয়েছে যা প্রকৃতভাবে এতোটাই সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে যে তা সনাক্ত করা দূরহ।"চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে সাফল্য অর্জনের পাশাপাশি, বিশ্বব্যপী ₹১.৩৯ বিলিয়ন (US$১৯.৩৪ মিলিয়ন) আয় করে।উড়তা পাঞ্জাব এবং ডিয়ার জিন্দেগি চলচ্চিত্রদুটি ভাটকে একাধিক পুরস্কার ও মনোনয়ন লাভ করতে সহায়তা করে; পূর্বে তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে স্ক্রিন পুরস্কার ও ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন, এবং পরবর্তীতে তিনি ফিল্মফেয়ারে আরো একটি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর মনোনয়ন পেয়েছেন।সাফল্যমণ্ডিত চলচ্চিত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহতির মাধ্যমে ভাট ২০১৭ সালে, বরুণ ধবনের বিপরীতে বদ্রীনাথ কি দুলহনিয়া রোমান্টিক কমেডি চলচ্চিত্রে পুনরায় খৈতানের পরিচালনায় পর্দায় উপস্থিত হন।চলচ্চিত্রে গ্রাম্য ভারতের এক স্বাধীন যুবতীর গল্প বলা হয়েছে যিনি তার চৌর্যবাদী বাগদত্তার (ধবনের) কাছ থেকে পিতৃতান্ত্রিক প্রত্যাশা অমান্য করে। নিউ ইয়র্ক টাইম্সের রেচেল সল্টজ লিঙ্গগত সমতা নিয়ে চলচ্চিত্রটির বক্তব্য নোট করেছেন এবং লিখেছেন, "বলিষ্ঠ নায়িকাদের চতুরতার মধ্যে না পড়েই [ভাট] অনায়াসেই সেই প্রশংসনীয় বিষয়টির প্রতিচ্ছবি তৈরি করেছেন: তিনি একজন আধুনিক মহিলা।"ভাট শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে আরেকটি ফিল্মফেয়ার মনোনয়ন পেয়েছিলেন।মেঘনা গুলজারের গুপ্তচরবৃত্তি থ্রিলার রাজি (২০১৮) চলচ্চিত্রে, ভাট সেহমত নামে একজন কাশ্মীরী গুপ্তচরের মুখ্য ভূমিকায় উপস্থিত হন, যিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে (ভিকি কৌশল অভিনীত) বিয়ে করেছিলেন।
১৯৭১-এর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত চলচ্চিত্রটি হরিন্দর সিক্কার কলিং সেহমত উপন্যাসের রূপান্তর।এই চলচ্চিত্রের জন্য ভাট ফিল্মফেয়ারে আরেকটি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছিলেন।২০১৯ সালে ভাট ইটার্নাল সানশাইন প্রোডাকশন নামে নিজের প্রযোজনা সংস্থা চালু করেন।সে বছর তার প্রথম চলচ্চিত্রের উপস্থিতি ছিল জোয়া আখতারের গালি বয় চলচ্চিত্রে রণবীর সিংয়ের বিপরীতে, যেটি ভারতীয় স্ট্রিট র্যাপার ডিভাইন এবং নায়েজের জীবন থেকে অনুপ্রাণিত একটি সঙ্গীতধর্মী চলচ্চিত্র।চলচ্চিত্রের পটভূমিতে উন্নতি ঘটাতে তিনি একটি ঘেটো উপভাষা শিখতে অভিনয়ের কর্মশালায় অংশ নিয়েছিলেন। ৬৯তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে চলচ্চিত্রটির প্রিমিয়ার হয়েছিল।চলচ্চিত্রটি ৯২তম একাডেমি পুরস্কারে সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে ভারত থেকে নির্বাচিত হলেও চুড়ান্ত মনোনয়ন লাভ করে নি। স্ক্রিন ইন্টারন্যাশনালের লি মার্শাল মন্তব্য করেছিলেন যে "এটি ভাটের তীক্ষ্ণ অভিনয় যা গালি বয় গল্পের সবচেয়ে সফলভাবে বিকৃত রসবোধ, প্রণয় এবং সামাজিক মন্তব্যগুলির মিশ্রণ বহন করে"।বিশ্বব্যাপী ₹২.৩৭ বিলিয়ন (US$৩২.৯৮ মিলিয়ন) আয়ের মাধ্যমে গালি বয় ভাটের সর্বাধিক উপার্জনকৃত চলচ্চিত্র হিসাবে পরিণত হয়।ভাটের পরবর্তী মুক্তিপ্রাপ্ত নাট্যচলচ্চিত্র কলঙ্ক, সেসময় পর্যন্ত তার সবচেয়ে বড় বাজেটের চলচ্চিত্র। ভারত বিভাজনের পূর্বে ১৯৪০-এর দশকের পটভূমিতে নির্মিত চলচ্চিত্রটিতে ধাওয়ান এবং ভাটকে প্রেমিকযুগল হিসাবে উপস্থাপন করেছে, এবং প্রস্তুতিতে তিনি মুঘল-ই-আজম (১৯৬০) এবং উমরাও জান (১৯৮১) চলচ্চিত্রগুলি থেকে সেই যুগের মহিলাদের শরীরি ভাষা রপ্ত করেছিলেন এবং উর্দু ভাষায় দক্ষতা অর্জনের জন্য তিনি পাকিস্তানি টেলিভিশন ধারাবাহিক জিন্দেগি গুলজার হাই দেখেছিলেন।দ্য হিন্দুর নম্রতা জোশী শোক প্রকাশ করেছিলেন যে চলচ্চিত্রটি কাহিনির ভিত্তিতে দৃশ্যত জাঁকজমক মহিমার উপর গুরত্ব দিলেও ভাট এই চরিত্রের সঙ্গে কতটা মানানসই ছিলেন তার খেয়াল করে নি।এটি বক্স অফিসে আশানরূপ আয় করতে ব্যর্থ হয়।
গায়িকা
ভাট হাইওয়ে (২০১৪) চলচ্চিত্রে "সোহা সোহা" গানে প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে কণ্ঠ দিয়েছেন। চলচ্চিত্রটির সঙ্গীত পরিচালক এ আর রহমান তাকে তার সঙ্গীত বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।২০১৪ সালে এছাড়াও, হাম্পটি শর্মা কি দুলহনিয়া চলচ্চিত্রে সুরকার শাহরিব-তোষির জন্য "সামঝাওয়া" গানের আনপ্লাগ্ড সংস্করণে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। ২০১৬ সালে, তিনি সহশিল্পী দোসন্ধির সাথে উড়তা পাঞ্জাব চলচ্চিত্রের সাউন্ডট্র্যাকের জন্য "ইক কুড়ি" গানের একটি বিকল্প সংস্করণ গেয়েছিলেন।
মিডিয়ায় ভাট
২০১৪ সালে ভাট ফোর্বস ইন্ডিয়ার সেলিব্রিটি ১০০ তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন। ২০১৭ সালে তিনি ফোর্বস এশিয়ার থার্টি আন্ডার থার্টি তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন।২০১৮ সালে তিনি সেলিব্রিটি ১০০ তালিকায় পুনরায় ১২তম স্থানে অন্তর্ভূক্ত হন। সে বছর, ফোর্বসের মতে ভাটের বার্ষিক আয় ₹৫৮৮.৩ মিলিয়ন (US$৮.১৯ মিলিয়ন) মিলিয়ন ডলারে অনুমিত হয়েছিল এবং যা তাকে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয়কারী অভিনেত্রী হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছে।একই বছরে, জিকিউর ভারতীয় সংস্করণে তাকে দেশের ৫০ জন প্রভাবশালী তরুণদের মধ্যে তালিকাভূক্ত করা হয়েছিল এবং "বিগ-বাজেট, অল-স্টার ব্লাউটস এবং
আরো স্ক্রিপ্ট-ভিত্তিক চলচ্চিত্রের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার" জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছিল।ভাটকে ২০১৮ সালের টাইমস অব ইন্ডিয়ার "৫০ সর্বাধিক কাঙ্ক্ষিত মহিলা" তালিকায় প্রথম স্থান দেওয়া হয়েছিল।
বেতন
আলিয়া ভট্ট নেট ওয়ার্থ ২০১৯ হিসাবে ২৫ কোটি টাকা।আলিয়া ভট্ট প্রতি ছবিতে ১০ কোটি টাকা ধার্য করে।
গাড়ি সংগ্রহ
আলিয়া ভাট্ট প্রিয় জিনিস
পুরস্কার ও সম্মাননা
Alia Bhatt |
নামঃআলিয়া ভাট
অন্যান্য নামঃআলু
জন্মঃ১৫ মার্চ ১৯৯৩ (বয়স ২৭)
জন্মস্থানঃবম্বে (বর্তমানে মুম্বাই), মহারাষ্ট্র, ভারত
জাতীয়তাঃব্রিটিশ ভারতীয়
নাগরিকত্বঃব্রিটিশ
শিক্ষাঃআইবিডিপি
শিক্ষার্থীঃজামাবাই নার্সি বিদ্যালয়
পেশঃঅভিনেত্রী,মডেল,গায়িকা
কার্যকালঃ১৯৯৬, ২০১২-বর্তমান
আদি নিবাসঃমুম্বাই
পিতাঃমহেশ ভাট
মাতাঃসোনি রাজদান
জন্ম ও শৈশব
আলিয়া ভাট ১৯৯৩ সালের ১৫ মার্চ ভারতের বম্বেতে (বর্তমানে মুম্বই) জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক মহেশ ভাট এবং মা অভিনেত্রী সোনি রাজদান।আলিয়ার বাবা-মা দুজনই হিন্দুধর্মালম্বী ছিলেন, তবে তাদের বিবাহের সময় দুজনই ইসলাম ধর্মে দীক্ষা নেন। বাবা-মা অনুসারে, ভাট এবং তার বোন শাহীন নাস্তিক হিসাবে বেড়ে উঠেন।মায়ের দিক থেকে, ভাট কাশ্মীরী-জার্মান এবং বাবার দিক থেকে,তিনি মূলত গুজরাতি বংশদ্ভূত।তার ডাকনাম আলু।ভারতীয় পরিচালক নানাভাই ভাট তার পিতামহ। তার বড় বোন, শাহীন (জন্ম ১৯৮৮) একজন লেখক;এবং চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও নির্মাতা পূজা ভাট তার সৎবোন ও সৎভাই চলচ্চিত্র অভিনেতা রাহুল ভাট। অভিনেতা ইমরান হাশমী ও চলচ্চিত্র পরিচালক মোহিত সুরি তার চাচাতো ভাই এবং প্রযোজক মুকেশ ভাট তার চাচা।ভাট ২০১১ সালে মুম্বইয়ের জামাবাই নার্সি বিদ্যালয় (আইবিডিপি) থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন।
জন্মসূত্রে ভাট ব্রিটিশ নাগরিক।রাহুল ভাট্ট (সৎ ভাই, ফিটনেস প্রশিক্ষক) ও পূজা ভাট্ট সৎ বোন।
সম্পর্ক
Ranbir Kapoor |
- রমেশ দুবে (শৈশবের প্রেমিক,৬ষ্ঠ শ্রেণি)
- আলী দাদরকর (শৈশব প্রেমিক, ক্লাস অষ্টম)
- বরুণ ধাওয়ান (অভিনেতা, গুজব)
- কাভিন মিত্তাল (ব্যবসায়ী, গুজব)
- সিদ্ধার্থ মালহোত্রা (অভিনেতা)
- রণবীর কাপুর (অভিতমা/বর্তমান)
রূপালী পর্দায়
Alia Bhatt |
আলিয়া ভাটের রূপালী পর্দায় অভিনয়ের সূচনা ঘটে ছয় বছর বয়সে, ১৯৯৯ সালে শিশুশিল্পীর ভূমিকায়, তনুজা চন্দ্র পরিচালিত নাট্যধর্মী সংঘর্ষ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে। এই চলচ্চিত্রে ভাটের সহ-শিল্পী ছিলেন, অক্ষয় কুমার ও প্রীতি জিন্টা, যেখানে ভাট জিন্টার শৈশব চরিত্রে অভিনয় করেছেন।চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে প্রায় ₹৫০ মিলিয়ন (US$৬,৯৫,৭৩০) আয় করে। ২০১২ সালে, ভাট চলচ্চিত্রে সর্বপ্রথম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন সিদ্ধার্থ মালহোত্রা ও বরুণ ধবনের বিপরীতে, করণ জোহর পরিচালিত স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার চলচ্চিত্রে।এ চলচ্চিত্রে তিনি শানায়া সিংহানিয়া চরিত্রে উপস্থিত হয়েছেন। চলচ্চিত্রে শানায়া একজন অত্যাধুনিক কিশোরী, যিনি ধবনের চরিত্রের সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত হন আবার অন্য চরিত্র মালহোত্রার প্রতিও এক পর্যায়ে আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। বলিউড হাঙ্গামার তরণ আদর্শ, ভাটের অভিনয় কর্মক্ষমতা সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন, "আলিয়ার চরিত্র কাভি খুশি কাভি গাম... (২০০১) চলচ্চিত্রে কারিনা কাপুরের অভিনয় স্মরণ করিয়ে দেয়। আড়ম্বরপূর্ণ, অভিজাত, রূপালী চামচ মুখে জন্মগ্রহণকারী, যে কিনা শুধু তার পোশাক-ব্যাগ জাঁমকালো ভাবে প্রদর্শন করতে পছন্দ করে আর ভালোবাসে ঐশ্বর্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে।অত্যন্ত বিচ্ছুরিতভাবে, আলিয়া একটি অতি-আত্মবিশ্বাসী চরিত্রে আত্মপ্রকাশ করেছেন।"হিন্দুস্তান টাইমসের চলচ্চিত্র সমালোচক অনুপমা চোপড়া কাপুর অভিনীত চরিত্রের সঙ্গে ভাট অভিনীত চরিত্রের সাদৃশ্য উল্লেখ করেছেন শুধুমাত্র তার "অভিঘাতী মনোভাব ব্যাতীত"।
স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার ছিল একটি বাণিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্র যা ২০১২ সালে বক্স অফিসে প্রায় ₹ মিলিয়ন (US$৯.৭৪ মিলিয়ন) আয় করে।২০১৪ সালে ভাটের তিনটি চলচ্চিত্র মুক্তির মাধ্যমে তিনি বলিউডে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে শুরু করেন।একই বছর তিনি রণদীপ হুদার বিপরীতে অভিনয় করেছেন ইমতিয়াজ আলী পরিচালিত হাইওয়ে পথচলচ্চিত্রে।এই চলচ্চিত্রে অপহরণ হওয়ার পর স্টকহোম সিনড্রোমে আক্রান্ত একটি কিশোরীর চরিত্রে ভাটের অভিনয় চলচ্চিত্র সমালোচকদের ইতিবাচক মন্তব্য অর্জন করে।ফিল্মফেয়ারের রাচিত গুপ্ত উল্লেখ করেছেন, "এটা বিস্ময়কর যে মাত্র বিশ বছর বয়সে কীভাবে আলিয়া এতো নিপুণ তারতম্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। এমন, যেন ওই চরিত্রের সঙ্গেই সে বেড়ে উঠেছে। সত্যিই তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রের সর্বাধিক প্রতিশ্রুতিশীল নতুন অভিনেত্রী।" সাইফির'র সোনিয়া চোপড়া মন্তব্য করেন, ভাট তার চরিত্রে "সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জিত", এবং এও উল্লেখ করেন যে, "আলিয়া তার কুণ্ঠাহীন ও বাস্তব কর্মক্ষমতা দিয়ে আপনাকে আবেগাপ্লুত করে তুলতে সক্ষম।
"চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে সাফল্য অর্জন করতে ব্যর্থ হলেও,ভাট শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার সমালোচক পুরস্কার লাভ করেন এবং একই অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে মনোনীত হয়েছিলেন।২০১৪ সালে, অর্জুন কাপুরের বিপরীতে করণ জোহর ও সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার যৌথ প্রযোজনায় অভিষেক বর্মণ পরিচালিত ২ স্টেটস চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন ভাট। ২০১৪ সালের এপ্রিলে মুক্তিপ্রাপ্ত এই চলচ্চিত্র চেতন ভগতের একই নামের উপন্যাসের চলচ্চিত্ররূপ। যেখানে আইআইএম আহমেদাবাদের দুই শিক্ষার্থীর গল্প বর্ণনা করা হয়েছে যারা তাদের বাবা-মাকে নিজেদের সম্পর্কের অনুমোদনের জন্য রাজি করানোর সমস্যায় পড়ে।
এখানে অনন্য স্বামীনাথম নামে একটি তামিল মেয়ের চরিত্রে অভিনয়ের জন্যে ভাট তামিল ভাষা রপ্ত করেছিলেন।সমালোচকরা আলিয়ার অভিনয়ের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে রেডিফ.কমে বলেছিলেন, ভাট "সত্যিই তার চরিত্রের মধ্যে বেড়ে উঠেছেন।"ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের শুভ্রা গুপ্ত বলেন, ভাট ছিলেন "বিস্ময়কর" এবং ছিলেন "সরল ও প্রাণবন্ত এবং স্বাভাবিক"। চলচ্চিত্রটি সে সময়ে শীর্ষ আয়কারী প্রযোজনা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে, যা বিশ্বব্যাপী ₹১.৭ বিলিয়ন (US$২৩.৬৫ মিলিয়ন) আয় করেছিল।২০১৪ সালে ভাটের সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ছিল শশাঙ্ক খৈতান পরিচালিত প্রণয়ধর্মী হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্রহাম্পটি শর্মা কি দুলহনিয়া।
Alia Bhatt |
যেখানে তিনি কাব্য প্রতাপ সিং নামে এক পাঞ্জাবী মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যে তার বিয়ের কিছুদিন পূর্বে একজন অপরিচিতের সঙ্গে প্রণয় সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে পড়েন। চলচ্চিত্রটি দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে (১৯৯৫) চলচ্চিত্রের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদিত এবং করণ জোহর প্রযোজিত এই চলচ্চিত্রে ভাটের সহ-শিল্পী ছিলেন বরুণ ধবন এবং সিদ্ধার্থ শুক্লা।হাম্পটি শর্মা কি দুলহনিয়া ভাটের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র যা বিশ্বব্যাপী ₹১ বিলিয়ন (US$১৩.৯১ মিলিয়ন) এর অধিক আয় করছিল।এই চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার সমালোচক পুরস্কার লাভ করেন, এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে মনোনীত হন।ভাটের এসকল সাফল্যে ২০১৪ সালে বক্স অফিস ইন্ডিয়া তাকে বছরের শীর্ষ বলিউড অভিনেত্রী হিসাবে আখ্যা দেয়।
সাফল্য(২০১৬–বর্তমানা)
২০১৬ সালে ভাটের তিনটি মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রের প্রথমটিতে, ভাট একজন প্রাণবন্ত যুবতীর চরিত্রে সিদ্ধার্থ মালহোত্রা ফাওয়াদ খানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন শকুন বাত্রা পরিচালিত কাপুর অ্যান্ড সন্স চলচ্চিত্রে, যা একটি অচল পরিবার সম্পর্কিত নাট্য-চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি সমালোচকদের ইতিবাচক মন্তব্যের পাশাপাশি বাণিজ্যিক সাফল্য অর্জন করেছিল। একই বছর ভাট ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের একটি দারিদ্র্যপীড়িত বিহারি অভিবাসী চরিত্রে অভিনয় করেন উড়তা পাঞ্জাব চলচ্চিত্রে। এটি অভিষেক চৌবে পরিচালিত মাদকের অপব্যবহার সম্পর্কিত একটি অপরাধ নাট্য চলচ্চিত্র।
এই চরিত্রের কিছু উল্লেখযোগ্য অংশগুলি ভাট পূর্বে তার বিভিন্ন চলচ্চিত্রে সম্পাদন করেছিলেন এবং প্রস্তুতিস্বরুপ তিনি মাদকবিষয়ক বিভিন্ন প্রামাণ্যচিত্র দেখা এবং বিহারি উপভাষায় কথা বলতে শিখেছিলেন।এই চলচ্চিত্রের সহ-অভিনেতা শাহিদ কপুর, কারিনা কাপুর এবং দিলজিৎ দোসাঞ্জ, বিতর্কের সৃষ্টি করেছিলেন যখন কেন্দ্রীয় চলচ্চিত্র অনুমোদন পর্ষদ উল্লেখ করে যে চলচ্চিত্রটি নেতিবাচকভাবে পাঞ্জাবের প্রতিনিধিত্ব করেছে এবং প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির বিপক্ষে চলচ্চিত্রটির ব্যাপক সেন্সরশিপ দাবি করে। বম্বে উচ্চ আদালত পরবর্তীতে একটি দৃশ্য বাদ দিয়ে প্রদর্শনীর জন্য চলচ্চিত্রটির ছাড়পত্র দেয়া হয়।চলচ্চিত্রে ভাটের অভিনয়-দক্ষতা সমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছিল, বিভিন্ন মন্তব্যকারীদের বিশ্বাস যে এটি তার সেরা কর্মক্ষমতা ছিল।রেডিফ.কম-এর রাজা সেন লিখেছিলেন, ভাট "তার উচ্চারণভঙ্গি নিয়ে বদ্ধ পরিকর এবং চলচ্চিত্রের সবচেয়ে অপ্রীতিকর অধ্যায়ের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম"।সমালোচকদের প্রশংসা প্রাপ্তির অব্যহতির মধ্য দিয়ে ভাট একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী চিত্রগ্রাহকের ভূমিকায় উপস্থিত হয়েছিলেন গৌরী সিন্ধে পরিচালিত ডিয়ার জিন্দেগি (২০১৬) নাট্য-চলচ্চিত্রে, যেখানে তিনি শাহরুখ খানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন।
Alia Bhatt |
ইন্ডিওয়ারের একটি লেখায়, অ্যানিসা জাভেরি উল্লেখ করেছেন যে, ভাট তার চরিত্রকে এমন অবস্থায় উন্নিত করেছ যেখানে "একটি ত্রি-মাত্রিক রূপ দেয়া হয়েছে যা প্রকৃতভাবে এতোটাই সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে যে তা সনাক্ত করা দূরহ।"চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে সাফল্য অর্জনের পাশাপাশি, বিশ্বব্যপী ₹১.৩৯ বিলিয়ন (US$১৯.৩৪ মিলিয়ন) আয় করে।উড়তা পাঞ্জাব এবং ডিয়ার জিন্দেগি চলচ্চিত্রদুটি ভাটকে একাধিক পুরস্কার ও মনোনয়ন লাভ করতে সহায়তা করে; পূর্বে তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে স্ক্রিন পুরস্কার ও ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন, এবং পরবর্তীতে তিনি ফিল্মফেয়ারে আরো একটি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর মনোনয়ন পেয়েছেন।সাফল্যমণ্ডিত চলচ্চিত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহতির মাধ্যমে ভাট ২০১৭ সালে, বরুণ ধবনের বিপরীতে বদ্রীনাথ কি দুলহনিয়া রোমান্টিক কমেডি চলচ্চিত্রে পুনরায় খৈতানের পরিচালনায় পর্দায় উপস্থিত হন।চলচ্চিত্রে গ্রাম্য ভারতের এক স্বাধীন যুবতীর গল্প বলা হয়েছে যিনি তার চৌর্যবাদী বাগদত্তার (ধবনের) কাছ থেকে পিতৃতান্ত্রিক প্রত্যাশা অমান্য করে। নিউ ইয়র্ক টাইম্সের রেচেল সল্টজ লিঙ্গগত সমতা নিয়ে চলচ্চিত্রটির বক্তব্য নোট করেছেন এবং লিখেছেন, "বলিষ্ঠ নায়িকাদের চতুরতার মধ্যে না পড়েই [ভাট] অনায়াসেই সেই প্রশংসনীয় বিষয়টির প্রতিচ্ছবি তৈরি করেছেন: তিনি একজন আধুনিক মহিলা।"ভাট শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে আরেকটি ফিল্মফেয়ার মনোনয়ন পেয়েছিলেন।মেঘনা গুলজারের গুপ্তচরবৃত্তি থ্রিলার রাজি (২০১৮) চলচ্চিত্রে, ভাট সেহমত নামে একজন কাশ্মীরী গুপ্তচরের মুখ্য ভূমিকায় উপস্থিত হন, যিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে (ভিকি কৌশল অভিনীত) বিয়ে করেছিলেন।
১৯৭১-এর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত চলচ্চিত্রটি হরিন্দর সিক্কার কলিং সেহমত উপন্যাসের রূপান্তর।এই চলচ্চিত্রের জন্য ভাট ফিল্মফেয়ারে আরেকটি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছিলেন।২০১৯ সালে ভাট ইটার্নাল সানশাইন প্রোডাকশন নামে নিজের প্রযোজনা সংস্থা চালু করেন।সে বছর তার প্রথম চলচ্চিত্রের উপস্থিতি ছিল জোয়া আখতারের গালি বয় চলচ্চিত্রে রণবীর সিংয়ের বিপরীতে, যেটি ভারতীয় স্ট্রিট র্যাপার ডিভাইন এবং নায়েজের জীবন থেকে অনুপ্রাণিত একটি সঙ্গীতধর্মী চলচ্চিত্র।চলচ্চিত্রের পটভূমিতে উন্নতি ঘটাতে তিনি একটি ঘেটো উপভাষা শিখতে অভিনয়ের কর্মশালায় অংশ নিয়েছিলেন। ৬৯তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে চলচ্চিত্রটির প্রিমিয়ার হয়েছিল।চলচ্চিত্রটি ৯২তম একাডেমি পুরস্কারে সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে ভারত থেকে নির্বাচিত হলেও চুড়ান্ত মনোনয়ন লাভ করে নি। স্ক্রিন ইন্টারন্যাশনালের লি মার্শাল মন্তব্য করেছিলেন যে "এটি ভাটের তীক্ষ্ণ অভিনয় যা গালি বয় গল্পের সবচেয়ে সফলভাবে বিকৃত রসবোধ, প্রণয় এবং সামাজিক মন্তব্যগুলির মিশ্রণ বহন করে"।বিশ্বব্যাপী ₹২.৩৭ বিলিয়ন (US$৩২.৯৮ মিলিয়ন) আয়ের মাধ্যমে গালি বয় ভাটের সর্বাধিক উপার্জনকৃত চলচ্চিত্র হিসাবে পরিণত হয়।ভাটের পরবর্তী মুক্তিপ্রাপ্ত নাট্যচলচ্চিত্র কলঙ্ক, সেসময় পর্যন্ত তার সবচেয়ে বড় বাজেটের চলচ্চিত্র। ভারত বিভাজনের পূর্বে ১৯৪০-এর দশকের পটভূমিতে নির্মিত চলচ্চিত্রটিতে ধাওয়ান এবং ভাটকে প্রেমিকযুগল হিসাবে উপস্থাপন করেছে, এবং প্রস্তুতিতে তিনি মুঘল-ই-আজম (১৯৬০) এবং উমরাও জান (১৯৮১) চলচ্চিত্রগুলি থেকে সেই যুগের মহিলাদের শরীরি ভাষা রপ্ত করেছিলেন এবং উর্দু ভাষায় দক্ষতা অর্জনের জন্য তিনি পাকিস্তানি টেলিভিশন ধারাবাহিক জিন্দেগি গুলজার হাই দেখেছিলেন।দ্য হিন্দুর নম্রতা জোশী শোক প্রকাশ করেছিলেন যে চলচ্চিত্রটি কাহিনির ভিত্তিতে দৃশ্যত জাঁকজমক মহিমার উপর গুরত্ব দিলেও ভাট এই চরিত্রের সঙ্গে কতটা মানানসই ছিলেন তার খেয়াল করে নি।এটি বক্স অফিসে আশানরূপ আয় করতে ব্যর্থ হয়।
গায়িকা
ভাট হাইওয়ে (২০১৪) চলচ্চিত্রে "সোহা সোহা" গানে প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে কণ্ঠ দিয়েছেন। চলচ্চিত্রটির সঙ্গীত পরিচালক এ আর রহমান তাকে তার সঙ্গীত বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।২০১৪ সালে এছাড়াও, হাম্পটি শর্মা কি দুলহনিয়া চলচ্চিত্রে সুরকার শাহরিব-তোষির জন্য "সামঝাওয়া" গানের আনপ্লাগ্ড সংস্করণে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। ২০১৬ সালে, তিনি সহশিল্পী দোসন্ধির সাথে উড়তা পাঞ্জাব চলচ্চিত্রের সাউন্ডট্র্যাকের জন্য "ইক কুড়ি" গানের একটি বিকল্প সংস্করণ গেয়েছিলেন।
মিডিয়ায় ভাট
Alia Bhatt |
২০১৪ সালে ভাট ফোর্বস ইন্ডিয়ার সেলিব্রিটি ১০০ তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন। ২০১৭ সালে তিনি ফোর্বস এশিয়ার থার্টি আন্ডার থার্টি তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন।২০১৮ সালে তিনি সেলিব্রিটি ১০০ তালিকায় পুনরায় ১২তম স্থানে অন্তর্ভূক্ত হন। সে বছর, ফোর্বসের মতে ভাটের বার্ষিক আয় ₹৫৮৮.৩ মিলিয়ন (US$৮.১৯ মিলিয়ন) মিলিয়ন ডলারে অনুমিত হয়েছিল এবং যা তাকে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয়কারী অভিনেত্রী হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছে।একই বছরে, জিকিউর ভারতীয় সংস্করণে তাকে দেশের ৫০ জন প্রভাবশালী তরুণদের মধ্যে তালিকাভূক্ত করা হয়েছিল এবং "বিগ-বাজেট, অল-স্টার ব্লাউটস এবং
আরো স্ক্রিপ্ট-ভিত্তিক চলচ্চিত্রের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার" জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছিল।ভাটকে ২০১৮ সালের টাইমস অব ইন্ডিয়ার "৫০ সর্বাধিক কাঙ্ক্ষিত মহিলা" তালিকায় প্রথম স্থান দেওয়া হয়েছিল।
বেতন
আলিয়া ভট্ট নেট ওয়ার্থ ২০১৯ হিসাবে ২৫ কোটি টাকা।আলিয়া ভট্ট প্রতি ছবিতে ১০ কোটি টাকা ধার্য করে।
গাড়ি সংগ্রহ
- ল্যান্ড রোভার রেঞ্জ রোভার ভোগ
- অডি Q7
- অডি Q5
- অডি এ 6
- বিএমডাব্লু 7-সিরিজ
আলিয়া ভাট্ট প্রিয় জিনিস
- প্রিয় অভিনেতা - শাহরুখ খান, রণবীর কাপুর, গোবিন্দ, লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও
- প্রিয় অভিনেত্রী - কারিনা কাপুর, কঙ্গনা রানাউত, জেনিফার লরেন্স
- প্রিয় ছায়াছবি - পায়াসা (১৯৫৭), দানব (২০০৩), ছেলেরা ডান না কাঁদুন (১৯৯৯)
- প্রিয় খাবার - মাছ, রাগি চিপস, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, রসগুল্লা
- প্রিয় ছুটির গন্তব্য - লন্ডন, হিমাচল প্রদেশ
- প্রিয় রঙ - লাল
- শখ - গান করা, গান শোনা, যোগব্যায়াম করা
পুরস্কার ও সম্মাননা
Alia Bhatt/Shahid Kapoor |
- ২০১৩ সালে: - টাইমস অফ ইন্ডিয়া ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস সেরা বছর বয়সী চলচ্চিত্রের জন্য "বছরের সেরা ছাত্র" চলচ্চিত্রের জন্য
- ২০১৬ সালে: - ‘উদতা পাঞ্জাব’ চলচ্চিত্রের জন্য সেরা অভিনেত্রীর ফিল্মফেয়ার পুরষ্কার
- ২০১৯ সালে: - ‘রাজি’ ছবির জন্য সেরা অভিনেত্রীর ফিল্মফেয়ার পুরষ্কার
- ২০১৯ সালে: - ‘রাজি’ চলচ্চিত্রের জন্য সেরা অভিনেত্রীর পর্দার পুরষ্কার
- ২০১৯ সালে: - বলিউড ফিল্ম জার্নালিস্টের পুরষ্কার ‘রাজি’ ছবির জন্য সেরা অভিনেত্রীর জন্য
- ২০২০ সালে: - ‘গলি বয়’ চলচ্চিত্রের জন্য সেরা অভিনেত্রীর ফিল্মফেয়ার পুরষ্কার
- ২০২০ সালে: - ‘গলি বয়’ চলচ্চিত্রের জন্য সেরা অভিনেত্রীর পর্দার পুরষ্কার
Alia Bhatt |
Share with your friends if you love our-Expose Lifestyle
For more Visit -Expose Lifestyle
Hope you liked this Alia Bhatt biography, and if you have any queries or suggestions regarding the same, feel free to comment below.
No comments