শচীন টেন্ডুলকাররের জীবনী/শচীন টেন্ডুলকারের অজানা জীবনকাহিনীz-Sachin Tendulkar LifeStory/Sachin Tendulkar lifestyle/ Sachin Tendulkar's unknown lifestyle
শচীন টেন্ডুলকারের জীবনী-
Sachin Tendulkar's Lifestory/Unknown Lifestyle/Untold Lifestyle
Sachin Tendulkar |
পূর্ণ নামঃশচীন রমেশ
জন্মঃ২৪ এপ্রিল ১৯৭৩
জন্ম স্থানঃবোম্বে, মহারাষ্ট্র, ভারত
ডাকনামঃমাস্টার ব্লাস্টার, তেন্ডলয়া, লিটল মাস্টার
উচ্চতাঃ ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি (১৬৫ সেন্টিমিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনঃডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনঃডানহাতি লেগ স্পিন, অফ স্পিন, মিডিয়াম পেস
বোলিংয়ের ধরনঃডানহাতি লেগ স্পিন, অফ স্পিন, মিডিয়াম পেস
ভূমিকাঃব্যাটসম্যান, অধিনায়ক
জন্ম ও শৈশবঃ
১৯৭৩ সালের ২৪শে এপ্রিল নির্মল নার্সিং হোমে শচীন টেন্ডুলকার জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা রমেশ টেন্ডুলকার একজন মারাঠি ঔপন্যাসিক ছিলেন। তার মাতা রজনী টেন্ডুলকার বীমা কোম্পানিতে কাজ করতেন।রমেশ বিখ্যাত ভারতীয় সুরকার শচীন দেববর্মণের নামানুসারে তার নাম শচীন রাখেন। শচীনের দুই দাদা নিতিন ও অজিত এবং দিদি সবিতা রমেশের প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সন্তান।শচীন কিন্তু তার বাবার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর সন্তান | তার বাবার প্রথম পক্ষের স্ত্রীয়ের সন্তানরা হলেন- নিতিন টেন্ডুলকার , অজিত টেন্ডুলকার এবং সবিতা টেন্ডুলকার
কিন্তু এইসবের জন্য তিনি পরিবারে কোনোদিনও তার দিদি ও দাদাদের কাছে অবহেলিত হননি | সর্বদাই তারা তিনজন ছোট্ট শচীনকে খুব ভালোবাসতেন | আর সেটার সবচেয়ে বড় প্রমান হলো তার দাদা অজিত টেন্ডুলকার , যিনি কিনা শচীনকে বড়মাপের একজন ক্রিকেটার বানাতে নিজের জীবনকে সম্পূর্ণরূপে উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন |প্রথম জীবনে শচীন বান্দ্রা (পূর্ব) অঞ্চলের সাহিত্য সহবাস কো-ওপারেটিভ হাউসিং সোসাইটিতে বসবাস করতেন।তিনি মুম্বইয়ের সারাদাশ্রম বিদ্যামন্দির হাইস্কুল থেকে পড়াশোনা করেন এবং সেখানে মাত্র দশম শ্রেণী অবধি পড়েন |পড়াশোনায় তিনি খুব একটা ভালো ছিলেন না, এর স্পষ্ট প্রমান তার মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল থেকেই পাওয়া যায় |কারণ সেই পরীক্ষা তিনি তিনবার দিয়েছিলেন এবং পরপর তিনবারই চূড়ান্ত ব্যর্থ হন | হিসাব মতো তিনি একজন ক্লাস নাইন পাস ছাত্র।
শচীন টেন্ডুলকারের বিবাহ জীবনঃ
২৪শে মে ১৯৯৫ সালে শচীন অবশেষে অঞ্জলি টেন্ডুলকারকে বিয়ে করেন | বিয়ের দুবছর পর অর্থাৎ ১২ই অক্টোবর ১৯৯৭ সালে তাদের প্রথম কন্যা সন্তানের জন্ম হয়, যার নাম রাখা হয় সারা তেন্ডুলকার এবং তারও ঠিক দুবছর পর অর্থাৎ ২৪শে সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ সালে তাদের দ্বিতীয় সন্তান অর্জুন টেন্ডুলকারের জন্ম হয় |
ক্রিকেট জীবনের শুরুঃ
শচীন কিন্তু প্রথম জীবনে একজন টেনিসপ্রেমী ছিলেন আর সেই খেলা নিয়েই জীবনে এগোতে চেয়েছিলেন | তার পছন্দের টেনিস তারকার নাম ছিলো জন ম্যাকেনরো, যিনি কিনা টেনিস দুনিয়ার সর্বকালের একজন সেরা খেলোয়াড় ছিলেন |তার দাদা অজিত ১৯৮৪ সালে তাকে দাদরের শিবাজী পার্ক অঞ্চলে বিখ্যাত ক্রিকেট কোচ রমাকান্ত আচরেকরের কাছে নিয়ে যান। আচরেকরের নির্দেশে দাদরের শচীনকে শারদাশ্রম বিদ্যামন্দির উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়।এবং আচরেকর তাকে ক্রিকেটে শিক্ষাদান শুরু করেন।এই সময় শচীন তার বিদ্যালয়কে মাতুঙ্গা গুজরাটী সেবা মন্ডল শীল্ড জয়ে সহায়তা করেন।এছাড়াও তিনি বোম্বাইয়ের কঙ্গ লীগ প্রতিযোগীতায় জন ব্রাইট ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে এবং পরে ক্রিকেট ক্লাব অব ইন্ডিয়ার হয়ে খেলেন।১৯৮৭ সালে চৌদ্দ বছর বয়সে মাদ্রাজে এমআরএফ পেস ফাউন্ডেশনে ফাস্ট বোলিং করার প্রশিক্ষণ নিতে গেলে অস্ট্রেলিয়ার দ্রুতগতির ফাস্ট বোলার ডেনিস লিলি তাকে ব্যাটিংয়ে মনোনিবেশ করতে বলেন।১৯৮৭ সালের ২০শে জানুয়ারী মুম্বইয়ের ব্রেবোর্ন স্টেডিয়ামে ক্রিকেট ক্লাব অব ইন্ডিয়ার সূবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এক প্রদর্শনী ম্যাচে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী ক্রিকেট দলের হয়ে শচীন পরিবর্তিত খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন।১৯৮৭ ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে খেলায় তিনি বলবয় হিসেবে সুযোগ পান।১৯৮৮ সালে তেন্ডুলকর তার খেলা প্রতিটি ইনিংসে শতরান করেন। ১৯৮৮ সালে তার বন্ধু বিনোদ কাম্বলির সঙ্গে লর্ড হ্যারিস শীল্ড আন্তঃ স্কুল প্রতিযোগিতায় সেন্ট জেভিয়ার্স হাই স্কুলের বিরুদ্ধে ৬৬৪ রানের রেকর্ড পার্টনারশিপ করেন। এই খেলায় শচীন ঐ ইনিংসে অপরাজিত ৩২৬* এবং পুরো প্রতিযোগিতায় এক হাজারেরও বেশি রান করেন।
১৯৮৭ সালের ১৪ই নভেম্বর টেন্ডুলকার রঞ্জি ট্রফি প্রতিযোগিতায় মুম্বই ক্রিকেট দলের হয়ে সুযোগ পেলেও কোন ম্যাচে প্রথম একাদশে খেলার সুযোগ তার হয়নি।নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দল ভারত সফর চলাকালীন ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে নেটে প্রশিক্ষণরত ভারতীয় দলের অধিনায়ক কপিল দেবের বলের বিরুদ্ধে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে শচীন সহজেই তাকে খেলতে থাকলে মুম্বই ক্রিকেট দলের অধিনায়ক দিলীপ বেঙ্গসরকার তাকে মুম্বই দলে প্রথম একাদশে সুযোগ দেন।
১৯৮৮ সালের ১১ই ডিসেম্বর মাত্র পনেরো বছর ২৩২ দিন বয়সে শচীন ঘরোয়া প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে মুম্বই ক্রিকেট দলের হয়ে গুজরাট ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ পেয়ে অপরাজিত ১০০* রান করে ভারতের কনিষ্ঠতম ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেকে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় শতরানের রেকর্ড করেন।এরপর তিনি দেওধর ট্রফি ও দিলীপ ট্রফিতেও শতরান করেন।
১৯৮৮-৮৯ মৌসুমে শচীন মুম্বইয়ের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন।এছাড়াও তিনি ১৯৮৯-৯০ মৌসুমের শুরুতে ইরানি ট্রফি প্রতিযোগিতায় অবশিষ্ট ভারতের হয়ে দিল্লি ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে অপরাজিত শতরান করেন।১৯৮৮ ও ১৯৮৯ সালে শচীন দুইবার ইংল্যান্ড সফর করেন।
১৯৯৮ সালে ভারত সফরে আসা অস্ট্রেলিয়া জাতীয় ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে মুম্বই ক্রিকেট দলের হয়ে প্রথম দ্বি-শতরান (২০৪*) করেন।২০০০ সালের এপ্রিলে রঞ্জি ট্রফি প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে তামিলনাড়ু ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে অপরাজিত ২৩৩* রান করেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটঃ
১৯৮৯ সালে, শচীন ভারতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ পেয়ে যান এবং করাচিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দেশের জার্সিতে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন |এই ম্যাচে তিনি মাত্র পনেরো করে ওয়াকার ইউনুসের বলে বোল্ড হন।অভিষেক টেস্ট খেলা তিনি ৩৫.৮৩ গড়ে ২১৫ রান করেন এবং তার খেলা একটিমাত্র একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে কোন রান না করেই তিনি আউট হন।এরপর ভারতের নিউজিল্যান্ড সফরে তিনি টেস্টে ২৯.২৫ গড়ে মোট ১১৭ রান করেন, যার মধ্যে দ্বিতীয় টেস্টের একটি ইনিংসে ৮৮ রান করেন।নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুটি একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচে তিনি ০ এবং ৩৬ রান করে আউট হন।১৯৯০ সালের ইংল্যান্ড সফরে দ্বিতীয় টেস্টে বিশ্বের দ্বিতীয় কনিষ্ঠতম ক্রিকেটার হিসেবে তিনি তার জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক টেস্ট শতরান (১১৯*) করেন।১৯৯২ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ঠিক পূর্বে অস্ট্রেলিয়া সফরে টেন্ডুলকার তৃতীয় সিডনি টেস্টে অপরাজিত ১৪৮* ও অন্তিম পার্থ টেস্টে ১১৪ রান করে ক্রিকেট বিশ্বের সম্ভ্রম আদায় করে নেন।
International Debut-Sachin Tendulkar |
১৯৮৯ সালে, শচীন ভারতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ পেয়ে যান এবং করাচিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দেশের জার্সিতে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন |এই ম্যাচে তিনি মাত্র পনেরো করে ওয়াকার ইউনুসের বলে বোল্ড হন।অভিষেক টেস্ট খেলা তিনি ৩৫.৮৩ গড়ে ২১৫ রান করেন এবং তার খেলা একটিমাত্র একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে কোন রান না করেই তিনি আউট হন।এরপর ভারতের নিউজিল্যান্ড সফরে তিনি টেস্টে ২৯.২৫ গড়ে মোট ১১৭ রান করেন, যার মধ্যে দ্বিতীয় টেস্টের একটি ইনিংসে ৮৮ রান করেন।নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুটি একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচে তিনি ০ এবং ৩৬ রান করে আউট হন।১৯৯০ সালের ইংল্যান্ড সফরে দ্বিতীয় টেস্টে বিশ্বের দ্বিতীয় কনিষ্ঠতম ক্রিকেটার হিসেবে তিনি তার জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক টেস্ট শতরান (১১৯*) করেন।১৯৯২ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ঠিক পূর্বে অস্ট্রেলিয়া সফরে টেন্ডুলকার তৃতীয় সিডনি টেস্টে অপরাজিত ১৪৮* ও অন্তিম পার্থ টেস্টে ১১৪ রান করে ক্রিকেট বিশ্বের সম্ভ্রম আদায় করে নেন।
সফল যাত্রা-
টেন্ডুলকার ১৯৯৪ সালে অকল্যান্ড শহরে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তার জীবনের একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম উদ্বোধনে নামেন।এই ম্যাচে তিনি ৪৯ বলে ৮২ রান করেন। ১৯৯৪ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কার কলম্বো শহরে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক শতরান করেন। ১৯৯৬ ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় তিনি দুইটি শতরান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন।
১৯৯৮ সালের অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের ভারত সফরে এলে এই সফরের প্রস্ততি হিসেবে রঞ্জি ট্রফি বিজয়ী মুম্বই ক্রিকেট দলের হয়ে এক তিনদিনের ম্যাচে শচীন বিখ্যাত স্পিন বোলার শেন ওয়ার্নের বিরদ্ধে খেলে অপরাজিত ২০৪* করে অস্ট্রেলিয়াকে পরাজিত করেন।এই প্রতিযোগিতায় শচীন দুইটি টেস্ট শতরান, একদিনের ক্রিকেটে কানপুরে শতরান এবং কোচিতে পাঁচ উইকেট নিয়ে ভারতকে বিজয়ী হতে সহায়তা করেন।
এরপর শারজাহতে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় ১৯৯৮ কোকা কোলা কাপ প্রতিযোগিতায় দুইটি গুরুত্বপূর্ণ শতরান করে ভারতকে কাপ জয়ী করেন।১৯৯৮ সালে ঢাকা শহরে অনুষ্ঠিত আইসিসি কোয়ার্টার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শচীন ১৪১ রান করে ও চার উইকেট নিয়ে ভারতকে সেমিফাইনালে পৌছে দেন।
১৯৯৯ সালে অনুষ্ঠিত ১৯৯৮-৯৯ এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ প্রতিযোগিতায় কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স মাঠে অনুষ্ঠিত প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের শোয়েব আখতারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে শচীন রান আউট হয়ে গেলে দর্শকদের ক্ষোভে খেলা বন্ধ করে দিতে হয়। কিন্তু কিছু পরে শচীনের আবেদনে দর্শকেরা শান্ত হলে খেলা আবার শুরু হয়।এই ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়।
এই প্রতিযোগিতায় শচীন শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শতরান করেন।১৯৯৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা চলাকালীন শচীনের পিতা রমেশ টেন্ডুলকারের মৃত্যু হলে শচীন প্রতিযোগিতার মাঝেই পিতার সৎকারের জন্য ভারত ফিরে আসেন। শ্রাদ্ধাদি অনুষ্ঠানের পর তিনি পুণরায় প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েই কেনিয়ার বিরুদ্ধে অপরাজিত ১৪০* রান করে তার পিতাকে এই শতরান উৎসর্গ করেন।
অধিনায়কত্বঃ
১৯৯৯ সালে শচীন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হন। কিন্তু তার অধিনায়ক জীবন খুব একটা সফল ছিল না।
আঘাতপ্রাপ্তি ও ব্যর্থ সময়কালঃ
২০০২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেন্ডুলকার পোর্ট অব স্পেন টেস্টে তার উনত্রিশতম শতরান করে ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের রেকর্ড স্পর্শ করেন।কিন্তু এরপরের ইনিংসগুলোয় যথাক্রমে ০, ০, ৮ এবং ০ রান করলে ভারত প্রতিযোগিতায় পরাজিত হয়। ২০০২ সালের আগস্ট মাসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনি তার ত্রিশতম টেস্ট শতরান করে ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের রেকর্ড ভেঙ্গে দেন।২০০৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় ১১টি ম্যাচে ৬৭৩ রান করে ভারতকে ফাইনালে নিয়ে যেতে সহায়তা করেন। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার নিকটে ভারত পরাজিত হলেও শচীন প্রতিযোগিতার সেরা নির্বাচিত হন।২০০৩ সালে তিনি টেস্ট ক্রিকেটে ভালো খেলতে না পারলেও ২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিডনিতে অপরাজিত ২৪১* রান করেন।পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরের টেস্ট প্রতিযোগিতায় তিনি অপরাজিত ১৯৪* রান করেন।এরপর কনুইয়ের যন্ত্রণায় ২০০৪ সালের বেশিরভাগ সময় শচীন ক্রিকেট খেলতে পারেননি।২০০৫ সালের ১০ই ডিসেম্বর টেন্ডুলকার ফিরোজ শাহ কোটলা মাঠে শচীন শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে নিজস্ব পঁয়ত্রিশতম টেস্ট শতরান করে বিশ্বরেকর্ড করেন।
Injured-Sachin Tendulkar |
কিন্তু ২০০৬ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর সুস্থ হয়ে ফিরে এসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে একদিনের ক্রিকেটে অপরাজিত ১৪১* রান করে তার চল্লিশতম শতরান করেন।২০০৭ শচীনকে ব্যাটিং ব্যর্থতার জন্য ইয়ান চ্যাপেল তাকে অবসর নেওয়ার পরামর্শ দেন।
স্ব-রুপে ফেরাঃ
২০০৭ ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় ব্যর্থতার পর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলায় তিনি আবার ওপেন করে প্রতিযোগিতার সেরা হন।ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পরের একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি ৫৩.৪২ গড়ে ভারতের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন।২০০৭ সালের শেষের দিকে ভারত অস্ট্রেলিয়া সফরে গেলে শচীন চারটি টেস্ট ম্যাচে মোট ৪৯৩ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন। সিডনিতে দ্বিতীয় টেস্টে শতরান করলে ঐ মাঠে শচীনের গড় দাঁড়ায় ২২১.৩৩।পরের অস্ট্রেলিয়া সফরে তিনি টেস্টে মোট ১২,০০০ রান করে ব্রায়ান লারার রেকর্ড ভেঙ্গে টেস্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের বিশ্বরেকর্ড করেন।নিউজিল্যান্ড সফরে তৃতীয় একদিনের ম্যাচে অপরাজিত ১৬৩ এবং প্রথম টেস্টে ১৬০ করে বিয়াল্লিশতম টেস্ট শতরান করেন। এরপর ত্রি-দেশীয় কম্প্যাক কাপের ফাইনালে ১৩৮ রান করে ভারতকে কাপজয়ী করেন।২০০৯ সালের শেষের দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার ভারত সফরে তিনি টেস্টে দুইটি শতরান এবং একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিশ্বের প্রথম দ্বি-শতরান করেন।
বিশ্বকাপ জয়ঃ
টেন্ডুলকারের জীবনে এটি ছিল সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সময়।এই প্রতিযোগিতার ফাইনালে ভারতে শ্রীলঙ্কাকে পরাজিত করে বিশ্বকাপ জয় করে।২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় ৫৩.৫৫ গড়ে ৪৮২ রান করে শ্রীলঙ্কার তিলকরত্নে দিলশানের পরেই প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় এবং ভারতের সর্বাধিক রান সংগ্রাহক হন।
শততম শতরানঃ
100 Century-Sachin Tendulkar |
২০১১ সালের ৮ই নভেম্বর টেন্ডুলকার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ফিরোজ শাহ কোটলা মাঠে খেলতে নেমে টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম ১৫,০০০ রান করার বিশ্বরেকর্ড করেন।এরপর ২০১২ সালের ১৬ মার্চ তেন্ডুলকর ২০১২ এশিয়া কাপ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে তার বহুপ্রতীক্ষিত শততম শতরান করে বিশ্বরেকর্ড করেন।এই রেকর্ডের পরেও ভারত বাংলাদেশের নিকট পরাজিত হয়।
100 Century |
অবসরঃ
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আশানুরূপ খেলতে না পারায় শচীন ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ২৩শে ডিসেম্বর একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা করেন।২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ১০ই অক্টোবর টেন্ডুলকার ঘোষণা করেন যে, তিনি তার জীবনের ২০০তম টেস্ট খেলে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেবেন।মুম্বাইতে অনুষ্ঠিত তার ২০০তম টেস্ট ম্যাচে তিনি ৭৪ রান করেন, ফলে টেস্ট ক্রিকেটে তার ১৬,০০০ থেকে মাত্র ৭৯ রান দূরে তিনি তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ করেন।
২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে একমাত্র টোয়েন্টি ২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি এই ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করবেন না।তাছাড়া ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে ৭৮ মাচে ৩৪.৮৩ গড়ে ২৩৩৪ রানের সাথে ১ টি ১০০ ও ১৩ টি ৫০ করেন।চ্যাম্পিয়ন্স লীগ টুয়েন্টি২০তে ১৩ মাচে ২০.৩৮ গড়ে ২৬৫ রান করেন।
২০১৩ চ্যাম্পিয়ন্স লীগ টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় খেলার পর টেন্ডুলকার টুয়েন্টি২০ ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
ব্যবসায়িক প্রাপ্তিঃ
তিনি ১৯৯৫ সালে ওয়ার্ল্ডটেলের সাথে ₹৩০ কোটি (US$৪.১৭ মিলিয়ন) চুক্তিবদ্ধ হন।পরবর্তীতে ২০০১ সালে আবারো ৫ বছরের জন্য নবায়ণ করেন ₹৮০ কোটি (US$১১.১৩ মিলিয়ন)র বিনিময়ে।২০০৬ সালে সাচি এন্ড সাচি’র সাথে ₹১৮০ কোটি (US$২৫.০৫ মিলিয়ন) তিন বছর মেয়াদী চুক্তি করেন।তেন্ডুলকর তার জনপ্রিয়তাকে ব্যবহার করে দু’টি রেস্টুরেন্ট হিসেবে - তেন্ডুলকর’স,কোলাবা, মুম্বই এবং শচীন’স, মুলুন্দ, মুম্বাই চালু করেন।মার্স রেস্টুরেন্টের মালিক সঞ্জয় নারাং এর সাথে উক্ত রেস্টুরেন্টগুলো যৌথভাবে পরিচালিত করছেন। এছাড়াও, তিনি ব্যাঙ্গালোরে শচীন’স নামে নতুন একটি রেস্তোরাঁ চালু করবেন। ২০০৭ সালে শচীন ফিউচার গ্রুপ এবং মানিপাল গ্রুপের সাথে জয়েন্ট ভেঞ্চার গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করে স্বাস্থ্যসেবা এবং খেলাধূলায় শারীরিক সক্ষমতার লক্ষ্যে ‘এস ড্রাইভ এণ্ড সাচ’ নামক পণ্য উৎপাদনে আসার ঘোষণা করে।
বিজ্ঞাপনঃ
জীবন্ত কিংবদন্তি ও বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে শচীন টেন্ডুলকার পেপসি,ক্যানন,এয়ারটেল,নাজারা টেকনোলোজিস,বুস্ট,রেনল্ডস,ইএসপিএন স্টার স্পোর্টস,স্যানিও বিপিএল সহ নানা পণ্য ও সংস্থার বিজ্ঞাপন চিত্রে অংশগ্রহণ করেন।
শচীনকে নিয়ে লেখা বইঃ
- Sachin Tendulkar – Masterful by Peter Murray, Ashish Shukla. Publisher: Rupa.
- Sachin: The Story of the World's Greatest Batsman by Gulu Ezekiel. Publisher: Penguin Global.
- The A to Z of Sachin Tendulkar by Gulu Ezekiel. Publisher: Penguin Global.
- Sachin Tendulkar-a definitive biography by Vaibhav Purandare. Publisher: Roli Books.
- If Cricket is a Religion, Sachin is God by Vijay Santhanam, Shyam Balasubramanian. Publisher: HarperCollins India
- Master Stroke: 100 Centuries of Sachin Tendulkar by Neelima Athalye. Publisher: Sakal Publications
- Sachin Tendulkar: Masterful by Peter Murray, Ashish Shukla. Publisher:Murray Advertising.
ব্যক্তিগত সম্মাননা অর্জনঃ
- আইসিসি পুরস্কার - স্যার গারফিল্ড সোবার্স ট্রফি, ২০১০-এর সেরা ক্রিকেটার
- পদ্মবিভূষণ, ভারতের ২য় সর্বোচ্চ পুরস্কার, ২০০৮
- আইসিসি বিশ্ব একদিনের আন্তর্জাতিক একাদশে খেলোয়াড় হিসেবে অন্তর্ভুক্তি: ২০০৪ ও ২০০৭
- রাজীব গান্ধী পুরস্কার (খেলা): ২০০৫
- ক্রিকেট বিশ্বকাপ, ২০০৩-এ টুর্ণামেন্টের সেরা খেলোয়াড়
- মহারাষ্ট্র সরকার কর্তৃক সর্বোচ্চ নাগরিকের পুরস্কার লাভ: ২০০১
- পদ্মশ্রী, ভারতের সর্বোচ্চ নাগরিকের পুরস্কার, ১৯৯৯
- খেলাধূলায় ভারতে সর্বোচ্চ সম্মাননা হিসেবে রাজীব গান্ধী খেলরত্ন লাভ: ১৯৯৭-৯৮
- উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটার: ১৯৯৭
- ক্রিকেটে অভূতপূর্ব ফলাফল করায় ভারত সরকার কর্তৃক অর্জুন পুরস্কার লাভ।
- অক্টোবর, ২০১০-এ লন্ডন স্পোর্ট এন্ড দ্য পিপল্স চয়েজ এওয়ার্ড হিসেবে দি এশিয়ান এওয়ার্ড লাভ।
- জুলাই ২০১৯-এ আইসিসির হল অব ফেমে শচীনের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। ষষ্ঠ ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে এ বিরল সম্মাননায় তাকে ভূষিত করা হয়।
- ইন্ডিয়ান আইকন শচীন টেন্ডুলকার লরিয়াস ওয়ার্ল্ড স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডস ২০২০ জিতেছেন
মোট সম্পদঃ
টেন্ডুলকারের মোট সম্পদ প্রায় 120 মিলিয়ন ডলার (মার্কিন) বা 834 কোটি ডলার (INR) হিসাবে অনুমান করা হয়। এটি তাঁর ভারতের ধনীতম ক্রীড়া-ব্যক্তি হয়ে উঠেছে।
সম্পদের উত্সের জন্য তার প্রাথমিক অর্থায়নটি ক্রিকেট থেকে হয়েছিল তবে তার পরে তিনি অনেক ব্র্যান্ডকে সমর্থন করেছেন এবং রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করেছেন।
"God of cricket"
"Little Master"..."Master Blaster"
"Little Master"..."Master Blaster"
Share with your friends if you love our-Expose Lifestyle
Nice work. Keep it up🥰.
ReplyDelete